বর্তমানে আমরা বাংলাদেশের সাধারন মানুষ কি ভাবে বেঁচে আছি? এভাবে কি মানুষ বাঁচে? আমরা সাধারন জনগন বোধহয় আর মানুষয় গোত্রের নেই। আমরা পিঁপড়ার মত বেঁচে আছি। এখন বাংলাদেশের সব জায়গায় বাচ্চাদের স্কুলে পরিক্ষা চলছে। অবোরোধ, হরতালে সেসব বাচ্চাদের, অভিবাবকদের কি ভুগান্তি হচ্ছে তার খবর কে রাখবে? আমার বড় নাতনিটি জন্মেছিলো প্রিম্যাচিউরড বেবী হিসেবে। সাত মাসে সিজার হলেও মাতৃগর্ভে ছয় মাস পর্যন্ত সে বেড়েছিলো। জন্মানোর আগেই ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষনা করেছিলো। সব শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে অশেষ মেহেরবান আল্লাহ-তায়ালার মেহেরবানীতে সে সুস্থ্য ভাবে বেঁচে আছে, যেখানে ডাক্তাররা বলেছিলো, ” এই বাচ্চা বাঁচলেও ভেজিটেবল হয়ে বাঁচবে”। রাখে আল্লাহ মারে কে!স্কুলে পড়াশোনা করছে। কিন্তু তার পিছনে তার মাকে প্রচুর খাটতে হয়। তাই তাকে বাইরে টিচারের বাসায় দিতে হয়েছে। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টায় আমার মেয়ে তাকে দিয়ে আসে। আবার রাত ৮টায় গিয়ে নিয়ে আসে। গতকালও যথারিতী তাকে টিচারের বাসা থেকে নিয়ে আসছিলো। রাস্তায় কোন গন্ডগোল নজরে পড়েনি। গ্যাস ভরার জন্য একটি গ্যাস স্টেসনে গাড়ী থামাতেই একদল ছেলে/যুবকেরা তাদের গাড়ী ঘিরে ফেলে ইটপাটকেল ছোড়া শুরু করে। আতংকে আমার মেয়ে নাতনিকে তার কোলে টেনে নেয়। ইটের আঘাত এসে পড়ে আমার মেয়ের পিঠে। জানালার ভাঙ্গা কাচের গুড়ো ছড়িয়ে পড়ে নাতনির শরীরে। সেই যুবকেরা যখন দেখে জানালার কাঁচ ভেঙ্গে গিয়েছে তখন উল্লাস-ধ্বনী দিতে দিতে অন্য দিকে ছুটে যায়। প্রায় ৩০/৩৫ জন পুলিশ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এ ঘটনা প্রত্যক্ষ করে। ভয়ে আতংকে নাতনি তখন অজ্ঞান। আমার মেয়ে চিৎকার করে তাকে ডাকছিলো। জ্ঞ্যান ফেরার পর সে বলে, ” মা আমরা কি মারা গিয়েছি”?
তার শরীর থেকে কাঁচের টুকরো বের করা হয়। প্রচন্ড মানসিক আঘাতে তার জ্বর এসে যায়।
এ কেমন দেশ তারা দেখে বড় হচ্ছে? এ দেশের প্রতি তাদের ভালোবাসা জন্মাবে কি করে? দেশ কি শুধু মাটি? মানুষ ছাড়া যেমন ঘর বলতে কিছু নয়। তেমনি দেশের মানুষ ছাড়া দেশের কি পরিচয়? ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি। দেখেছি গ্রামের সহজ সরল মানুষ কোন কিছু পাওয়ার লোভ না করেই দেশকে মুক্ত করতে নিজের জীবন, রক্ত দিয়েছে। আজ মনে হচ্ছে সে রক্ত, জীবন দান বৃথা। এ দেশ দেখার জন্যই কি আমরা যুদ্ধ করেছিলাম? এক সাগর রক্তের বিনিময়ে আমরা কি সত্যি স্বাধীনতা পেয়েছি?
আসলে আপা কি আর বলব। ভেবে কোন কুল পাই না…।
বর্তমানে কেমন আছে ওরা। কি দুঃখজনক ব্যাপার।
(ফিরে আসছি, আপনি আপনার এই ধরনের ঘটনা গুলো টুকে এখানে জড় করতে থাকুন।)
এখন ভালো আছে আলহামদুলিল্লাহ! তবে নাতনি বলছে সে আর টিচারের বাসায় যাবেনা। তার আর পড়া লাগবেনা।
ভেবে দেখুন বাচ্চাদের মনে কি ধরনের ছাপ পড়ছে!
আপা, দুঃখজনক ব্যাপার…। বলার কিছু খুঁজে পাচ্ছি না।
khub kosto pelam
পড়ার জন্য ধন্যবাদ ভাই রিমি।
কি আর করা! এটাই এখন আমাদের জীবন।
এদেশের জনগণের প্রজা। আর রাজনৈতিক দলের কর্মীরা রাজকর্মচারী।
ঠিক বলেছেন মারুফ আল্লাম।
গনতন্ত্র রুপকথায় ঠাই নিয়েছে।
যে কেউ যে কোন দিন হয়ে যেতে পারি ‘বিশ্বজিত’।
বিশ্বের সব কিছু ফেলে রেখে পাড়ি দিতে পারি অন্য কোন জগতে।
অনিশ্চিত জীবন নিয়ে সময় কাটে।
বাইরে গেলে সে ফিরে আসবে কিনা তার কোন নিশ্চয়তা নেই।
মেয়ে ফিরেছে তার কন্যাকে নিয়ে আহত অবস্থায়।
বেঁচে ফিরেছে এতেই আমরা তৃপ্ত।
কী আশ্চর্য তৃপ্তিবোধ আমাদের এখন!
আমরা সব হারিয়েও সহ্য করি সব কিছু।
আমরা এখন সর্বংসহা!!
ঠিক বলেছেন হুদা ভাই। যদি গাড়ীতে আগুন ধরিয়ে দিতো? ভাবতেই গা শিউরে উঠছে।
আমরা এখন সর্বংসহা!!
আপনার পোস্টে কমেন্ট করে প্রেস করতেই আউট হয়ে গেলাম। নেট এতো স্লো। আর আমার কম্পু তো খোড়া হয়ে বসে আছে।
চোখের অবস্থা এখন ভালো তো?
না আপু আমরা বেঁচে নেই। আমরা শুধু কার্টুন হয়ে মাটির উপর ঘুরে বেড়াচ্ছি আর যারা মানুষ,যারা বেঁচে আছেন(!),আমাদের শ্রদ্ধাভাজন অত্যাচারী ও তাদের দোশররা, তারা আমাদের লাথিয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছেন। ওনারা ভাল আছেন তো?
পিঠার ছবি গুলো এখানে দিতে পারতেন। খালি ফেইসবুক! আমি আবার ফেইসবুকে যেতে পারি না!
অনেক অভিমান, অনেক কষ্ট, অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যথা নিয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছি। দূর থেকেই দেশের জন্য কাজ করে যাই, প্রার্থনা করে যাই যেন কুৎসিত রাজনীতির হাত থেকে হিউম্যানিটি, মর্যালিটী বেঁচে থাকে।
জেনে স্বস্তি পেলাম যে তোমার মেয়ে আর নাতনী জান নিয়ে ঘরে ফিরেছে।
মাঝে মাঝে এতো অভিমান হয়, মনে হয় এই দেশ ছেড়ে চলে যাই। আমার মত মানুষেরা এই দেশে বাস করার অযোগ্য।
কিন্তু যাওয়ার অবস্থা নেই বলেই মুখ বুজে অন্যায়, অবিচার সহ্য করে যাই, আর কষ্টে নীল হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ি।
অনেক অনেক ধন্যবাদ সোনাপাখী আমার এই সামান্য ব্লগ পড়ার জন্য! ❤